ভাবসম্প্রসারণ লেখার পদ্ধতি - ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনার নিশ্চয়ই ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম গুগলে সার্চ করে আজকের পোস্টটিতে এসেছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন কেননা আজকের পোস্টটিতে আমরা ভাবসম্প্রসারণ লেখার পদ্ধতি - ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই আমাদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকুন।
ভাবসম্প্রসারণ লেখার পদ্ধতি - ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনার নিশ্চয়ই ভাবসম্প্রসারণ লিখতে চান তার আগে অবশ্যই ভাব সম্প্রসারণ লেখার নিয়ম জানা উচিত যা আমার একটু আলোচনা করব।

ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম

ভাব-সম্প্রসারণঃ 'ভাব' শব্দটির শাব্দিক অর্থ 'মর্ম' বা 'নিগূঢ় অর্থ'। সাধারণত 'ভাব-সম্প্রসারণ' কথাটির অর্থ-কবিতা বা গদ্যের কোন উদ্ধৃতাংশের অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে ব্যাখ্যা, বিস্তারিত করে লেখা, বিশ্লেষণ করা। ভাবের সুসঙ্গত সার্থক প্রসারণই ভাব-সম্প্রসারণ। আবৃতকে উন্মোচিত, সংকেতকে নির্ণীত করে তুলনীয় দৃষ্টান্ত ও প্রবাদ-প্রবচনের সাহায্যে সহজ ভাষায় ভাবের বিন্দুকে বিস্তার করার নাম 'ভাব-সম্প্রসারণ'। অন্যভাবে বলা যায়- প্রায় প্রতিটি কবিতা বা গদ্যের দু-একটি চরণে বা অংশে গভীর ভাব বা নিগূঢ় অর্থ প্রচ্ছন্ন থাকে, যা মানবজীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। ব্যাখ্যার মাধ্যমে এ ভাবকে সহজবোধ্য করে তোলার নামই ভাব-সম্প্রসারণ।

ভাব-সম্প্রসারণের গুরুত্ব

জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তার করার জন্য এবং দক্ষতা অর্জনের জন্য ভাব-সম্প্রসারণের অনুশীলন করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। 
  • ভাব-সম্প্রসারণ নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে
  • কোন সংক্ষিপ্ত অর্থপূর্ণ বক্তব্যকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।
  • বিশেষ কোন বক্তব্য থেকে সাধারণ সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
  • ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে ভাষা চর্চার যে গুরুত্ব আছে, তা অনুধাবন করা যায়।
  •  রূপক বা প্রতীকের আড়ালের ভাবটি বুঝতে পারা যায়।
  • জ্ঞানের পরিধির বিস্তার ঘটে।
ভাব-সম্প্রসারণ লেখার পদ্ধতি
ভাব-সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন-
  • ভাব-সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান কাজ হলো- কবিতা বা গদ্যের যে উক্তি বা অংশের ভাব-সম্প্রসারণ করতে হবে, তা একাধিকবার অভিনিবেশ সহকারে পড়ে মূলভাব বা অন্তর্নিহিত ভাবটি উদঘাটন করা।
  • প্রদত্ত ভাব অনেক সময় রূপকের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে থাকে। তাই রূপক বা প্রতীকের আড়ালের ভাবটি উদঘাটন করতে হবে। যেমন- 
কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে
'ভাই বলে ডাক যদি দেব গলা টিপে'
হেনকালে আকাশেতে উঠিলেন চাঁদা;
কেরোসিন শিখা বলে, 'এসো মোর দাদা'

এখানে 'কেরোসিন শিখা', 'মাটির প্রদীপ' এবং 'চাঁদ' এই তিনটি বস্তুই রূপক। অর্থাৎ কবি এখানে এদের রূপের আড়ালে ভিন্ন কোন ভাবের কথা ব্যক্ত করতে চেয়েছেন। এখানে যে কেরোসিন শিখার মধ্যেই মূল ভাবটি দ্যোতিত হয়েছে, সে আসলে কেরোসিন শিখা নয়। সে হল আত্মমর্যাদাহীন, সংকীর্ণচিত্ত, আত্মম্ভরি, তোষামোদপ্রিয় মানুষ। তাই প্রথমে রূপকের আক্ষরিক অর্থটি উন্মোচন করা প্রয়োজন।
  • সহজ ও সরল ভাষায় ভাবসত্যটি উপস্থাপন করা উচিত। মূলভাবকে সম্প্রসারিত করতে গিয়ে এমন কোন জটিল বাক্য ব্যবহার করা উচিত নয়- যা পাঠকের কাছে জটিল বা দ্ব্যর্থবোধক হয়ে ওঠে। তাই ভাষা প্রাঞ্জল ও সাবলীল হওয়া জরুরী।
  • ভাব-সম্প্রসারণের সময় ভাবের সম্প্রসারণ করতে হয় বলে বাহুল্য বর্জন করতে হবে। একই কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে।
  • সম্প্রসারিত ভাবকে তিনটি অংশে বিন্যস্ত করা ভালো। যেমন- প্রথম অংশ: মূলভাব দ্বিতীয় অংশ: মূলভাবের বিস্তার তৃতীয় অংশঃ মন্তব্য।
  • ভাব-সম্প্রসারণের আয়তন নির্ধারণে প্রদত্ত নম্বর বিবেচনা করতে হবে। সাধারণত: দু'শ থেকে আড়াই শ শব্দের মধ্যে বা বিশ থেকে পঁচিশ লাইনের মধ্যে এর পরিধি হতে পারে।
  • ভাব-সম্প্রসারণে প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত বা উপমা দেওয়া যাবে। তবে অপ্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি ব্যবহার না করাই ভালো।
  • ভাব-সম্প্রসারণে কবি বা লেখকের নাম উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। যেমন 'কবি এখানে বলতে চেয়েছেন, 'লেখকের মতে 'ইত্যাদি।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ভাব সম্প্রসারণ কিভাবে লিখবেন তার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং ভাব সম্প্রসারণ লেখার কিছু নিয়ম রয়েছে যা জেনে আপনাকে লিখতে হবে তারপরে আপনি পরীক্ষাতে ভালো মার্ক আশা করতে পারেন। কেননা নিয়ম মেনে নাও লিখলে শিক্ষকরা তেমন পছন্দ করেনা এবং মার্কও দেয় না। তাই আপনাদের ভাবসম্প্রসারণ লেখার জন্য পদ্ধতি শিখতে হবে এবং জানতে হবে। নিজে জানুন এবং অন্যজনকে জানান এই শ্লোগানে শেষ করছি আজকে পোস্টটি। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লিংক বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url