Water purification method - পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি জেনে নিন

পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত বাঁচতে পারব না। তাই বেঁচে থাকার জন্য আমাদের পানির প্রয়োজন। আর এই পানি যদি দূষিত হয় তাহলে আমাদের জীবনযাত্রায় অসুস্থতায় ভুগতে হবে। আপনি যদি পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি - Water purification method তা জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন।
পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি
পোস্টসূচিপত্রঃমানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন পানিই হলো নিরাপদ পানি।পানি বিভিন্ন উপায় বিশুদ্ধ করা যায়।তাই দেরি না করে চলুন আমরা পানির বিশুদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করি।

ভূমিকা

পানি আমাদের জীবনের জন্য অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু সেটা অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি, দূষিত পানি নয়। কারণ দূষিত পানি দিয়ে হতে পারে নানারকম রোগ ব্যাধি। আরে পানি যদি অবিশুদ্ধ বা দূষণ হয় যা আমাদের জীবনের জন্য ক্ষতিকর। পৃথিবীর সকল পশু পাখি পানি পান করে বেঁচে থাকে। তাই তাদের পান করার জন্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি। পানিকে বিশুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। যা আমরা উক্ত পোস্টে আলোচনা করব। নিচে বিশুদ্ধ পানির বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হল।

বিশুদ্ধ পানি বৈশিষ্ট্য কি

যে পানি স্বচ্ছ, গন্ধহীন, পরিষ্কার এবং বর্ণহীন যাতে ভাসমান জৈব রাসায়নিক পদার্থ কিংবা অজৈব পদার্থ অনুপস্থিত এবং সাধারণত কোনো রোগ জীবানু থাকে না তাকে বিশুদ্ধ পানি বলে। অর্থাৎ কোনো রকমের ময়লা আবর্জনা, জীবাণু মুক্ত পানিকেই বিশুদ্ধ পানি বলা হয়। বিশুদ্ধ পানিতে PH মান ৪.৫ থেকে কম এবং৯.৫ অপেক্ষা বেশি হলে তা জীবের বসবাসের অযোগ্য পানি। তাই আমাদের পানির পিএস মান এর দিকে ও খেয়াল রাখতে হবে।

কি কি উপায়ে পানি বিশুদ্ধকরণ করা যায়?

বিভিন্ন উপায়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। যেমনঃ
  • ফুটানো
  • ক্লোরিনেশন
  • থিতানো
  • ছাঁকন
  • ফিল্টার
  • ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লিচিং
  • পটাশ বা ফিটকিরি
  • সৌর পদ্ধতি
  • আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি
  • আয়োডিন
উপরোক্ত উপায়ে প্রথম চারটি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি - Water purification method 

ক্লোরিনেশন, ফুটানো,থিতানো, ছাঁকন,পটাশ বা ফিটকিরি,ফিল্টার এই পদ্ধতি গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

ক্লোরিনেশনঃ পানিকে জীবাণুমুক্ত করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ক্লোরিনেশন। পানিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ব্লিচিং পাউডার যোগ করলে উৎপন্ন ক্লোরিন জারিত করার মাধ্যমে জীবাণুকে ধ্বংস করে। পানিতে জীবাণু থাকলে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে তা মেরে ফেলতে হবে। এ ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক হিসেবে ক্লোরিন গ্যাস ও ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় এ পদ্ধতিকে পানির ক্লোরিনেশন বলা হয়। এক্ষেত্রে পানিতে ব্লিচিং পাউডার যোগ করার পর ছেঁকে নিলে পানি পানযোগ্য হয়।

ফুটানোঃ পানিকে কমপক্ষে 15 থেকে 20 মিনিট ধরে ফুটালে পানি জীবাণুমুক্ত হয়। পানিকে অবশ্যই ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ ফুটাতে হবে। তারপর সেই পানি ঠাণ্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে সংরক্ষণ করতে হবে।ফুটানো পানি বেশিদিন রেখে দিলে তাতে পুনরায় জীবাণুর আক্রমণের আশঙ্কা থাকে। তাই ফোটানো পানি দুইদিনের বেশি ব্যবহার না করা উচিত।। তবে আর্সেনিকযুক্ত পানি ফুটালে তা আরও ক্ষতিকর হয়।

ছাঁকনঃ বর্তমানে বাজারে জীবাণু, আর্সেনিক ও অন্য দূষক দূর করতে ফিল্টার পাওয়া যাচ্ছে। এই ফিল্টার দিয়ে ছেঁকে নিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।

পটাশ বা ফিটকিরিঃ ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার নিয়মঃ এক পাত্রে পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে।৪৮ লিটার পানিতে দুই গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা রেখে দিলে সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে পাত্রের উপর থেকে শোধিত পানি সংগ্রহ করে তলানির পানি ফেলে দিতে হবে।
ফিল্টারঃ ফোটানোর মাধ্যমে জীবাণু আর অনুজীবী বা পরজীবী ধ্বংস হলেও পানির রাসায়নিক উপাদান থেকে যায়।বাজারে সাধারণত দুই ধরনের ফিল্টার পাওয়া যায়। একটি সিরামিক ফিল্টার এবং অপরটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত রিভার অসমোসিস ফিল্টার। আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ সিরামিক ফিল্টার বেশি ব্যবহার করে থাকে। তবে ফিল্টারটিও যথাযথ পরিষ্কারের করার প্রয়োজন রয়েছে।

থিতানো প্রক্রিয়া কি?

এক বালতি পানিতে 1 চামচ ফিটকিরি (K2SO4. Al2(SO4)3 24H2O) গুঁড়া যোগ করে আধা ঘণ্টা রেখে দিলে পানির সব অপদ্রব্য থিতিয়ে বালতির তলায় জমা হয়। তারপর উপর থেকে পানি ঢেলে পৃথক করা হয়। এভাবে অদ্রবণীয় দূষক দূর হয়। এভাবে পানি থেকে দূষণমুক্ত করা যায়। পানি থেকে জীবাণু মুক্ত করা যায়।

পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা

আমাদের জীবন ধারণের জন্য বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন। অর্থাৎ পানি বিশুদ্ধতার প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। উপলব্ধ প্রক্রিয়াগুলো ব্যবহার করলে আমরা বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারব।এই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন কাজের জন্য বিশুদ্ধ জল বা পানি উৎপাদন করা। আমরা পানি বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে ক্লোরিনেশন, ফুটানো,থিতানো, ছাঁকন উক্ত বিষয়গুলো আলোচনা করেছি।

শেষ কথা

পানি পরিচ্ছন্ন রাখা যতটা সহজ বিশুদ্ধ করা ততটা সহজ নয়। নানা রকম ময়লা ও রোগ জীবাণু মিশে পানিকে দূষিত করে। তাছাড়া পানিতে ভাসমান ময়লা, বিষাক্ত গ্যাস ও রোগজীবাণু সম্পুর্ণভাবে অপসারণ করা না গেলে বিশুদ্ধ করা সম্ভব নয়। 

তাই আমাদের উল্লেখিত বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে হবে।উপরোক্ত পোস্টটিতে পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। আপনাদের যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লিংক বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url