পড়া মনে রাখার ৫টি সহজ কৌশল জেনে নিন
আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছে যাদের পড়ায় মন বসে না। সাধারণত তারা পড়া মনোযোগ দিয়ে পড়ে না ,ফলেতাদের পড়া মনে রাখতে অসুবিধা হয়। আজকের পোস্টটিতে আমরা পড়া মনে রাখার ৫টি সহজ কৌশল নিয়ে আলোচনা করব। চলুন জেনে নেই পড়া মনে রাখার ৫ বৈজ্ঞানিক উপায়।
আপনারা কি জানেন পড়া মনে রাখার সহজ ও বৈজ্ঞানিক উপায় রয়েছে যা আপনারা জানলে পড়া অনায়াসে মনে রাখতে পারবেন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি আশা করছি সকল কিছু বুঝতে পারবেন।
১. পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা
আমরা অনেকেই মনে করি যে সারাদিন সারারাত পড়লেই নাকি পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই সবার ভুল ধারণা। কারণ সবসময়ই সবার ব্রেইন একইভাবে কাজ করতে পারে পারে না। আমাদের ব্রেইন নির্দিষ্ট সময়ে ভালো কাজ করে। সেই সময়ে পড়লে পড়া অতি সহজে মনে রাখা যায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে বিকালের পর আমাদের ব্রেইন এর কার্যকর ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই বিকালে বা সন্ধ্যায় পড়াশোনা করলে পড়া বেশি মনে থাকে অর্থাৎ পড়া বেশি কার্যকর হয়।
আরো পড়ুনঃ আয়তক্ষেত্রের ক্ষেএফল ও পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র
তবে আরেকটি সময় রয়েছে যে সময় পড়লে সবচেয়ে বেশি পড়া মনে থাকে। সেটি হল সকালে অর্থাৎ ভোর সকালে। সকালে ৫-৬ টার সময় ঘুম থেকে উঠলে আমাদের ব্রেইন অধিক কার্যকরী হয় অর্থাৎ সেই সময়টাই আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক ফ্রেশ থাকে। এই সময় যদি আপনার মনে থাকে না এমন পড়াও যদি পড়েন তাহলে সেটি মনে থাকবে। কারণ ভোর সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের ব্রেইন একেবারে ফ্রেশ এবং ব্রেনের কার্যকারিতা সচল থাকে। তাই আপনারা ভোর সকালে পড়ার চেষ্টা করবেন।
২. নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুমানো
পড়া মনে রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুমাতে হবে। একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের মানব মস্তিষ্ক বা ব্রেইন কোন তথ্য, ইনফরমেশন আমাদের স্মৃতিতে বা মস্তিষ্কের মেমোরিতে ধরে রাখে ঘুমানোর সময়। তাই পড়ালেখা মনে রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমানো উচিত।
সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। যদি এর কম ঘুমান তাহলে আপনার পড়া মনে রাখার ক্ষমতা কমে আসবে। তাই আপনারা সব সময় চেষ্টা করবেন রাত ৯ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া এবং সকাল পাঁচটা বা ছয়টায় উঠে পড়তে বসা।
৩. পড়তে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাটা
পড়তে বসার পূর্বে 10 মিনিট হাঁটলে বা সাধারণ ব্যায়াম করলে আমাদের মস্তিষ্কে কার্যকর ক্ষমতা অর্থাৎ মস্তিষ্কের ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে খুব সহজ হয়। গবেষণায় দেখা গেছে পড়ার পূর্বে 10 মিনিট হাঁটলে বা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে কার্যক্ষমতা প্রায় ১০% পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই পড়ার পূর্বে দশ মিনিট হাঁটবেন বা ব্যায়াম করবেন।
৪. পড়ার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ
পড়ার প্রতি অবশ্যই মনোযোগ থাকতে হবে। আপনি যে বিষয়ে পড়বেন অবশ্যই সেই বিষয়টি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকবেন তাহলে দেখবেন অতি সহজে পড়া আপনার মস্তিষ্কে গেথে যাবে অর্থাৎ পড়া মনে থাকবে। পড়ার সময় পড়ার টেবিল থেকে মোবাইল ফোন সবসময় দূরে রাখবেন। মোবাইল ফোনের নোটিফিকেশন বা সাউন্ড অফ করে রাখবেন।
পড়ার টেবিলে কখনো মোবাইল ফোন রাখবেন না। কারণ মোবাইল ফোন আপনার পড়ার মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। আর আরেকটা বিষয় হলো প্রতি এক ঘণ্টায় ১০ থেকে ২০ মিনিট করে বিরতি নিয়ে পড়বেন। কখনোই একটানা ২ থেকে ৩ ঘন্টা পড়বেন না মাঝে মাঝে বিরতি নিয়ে পড়বেন। এভাবে পড়লে আপনার মস্তিষ্ক ফ্রেশ থাকবে এবং পড়া অতি সহজে মনে থাকবে।
৫. বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা
মানব মস্তিষ্ক ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিগুলোকে তখনি দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করবে যখন আপনি সেই কাজটি বারবার করবেন। আপনি যে কাজই করুন না কেন আপনি যদি সেই কাজে পারদর্শী হতে চান তাহলে সেই কাজটি আপনাকে বারবার প্র্যাকটিস বা করতে হয়, তেমনি পড়া মনে রাখার ক্ষেত্রেও আপনি যে বিষয়টি মনে রাখতে চান সে বিষয়টি বারবার পড়তে হবে এবং প্র্যাকটিস করতে হবে।
তাই বেশি বেশি পড়বেন, অনুশীলন করবেন এবং পড়া খাতায় লেখার চেষ্টা করবেন। কারণ পড়া খাতায় লিখলে বা প্র্যাকটিস করলে বেশি মনে থাকে যা আপনারা সকলেই জানেন। তাই বেশি বেশি পড়া এবং অনুশীলন করা পড়া মনে রাখার অন্যতম উপায়।
শেষ কথাঃ পড়া মনে রাখার বৈজ্ঞানিক উপায়
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা পড়ে মনে রাখার সহজ কৌশল জানতে পেরেছেন। উক্ত কৌশল গুলো ফলো করে পড়াশোনা করবেন। আর মনে রাখবেন ভালো রেজাল্ট করতে হলে আপনাকে ভালো করে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। আর আপনার যদি মনোযোগ না বসে তাহলে উপরের দেওয়া কৌশল গুলো ব্যবহার করে পড়াশোনা করবেন। অন্যদের পড়াশোনা মনে রাখার কৌশল জানাতে আর্টিকেল বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আর এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।