সহী হাদিছ অনুসারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী জেনে নিন

মুসলিম হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত সহী হাদিছ অনুসারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী অনুযায়ী নামাজ পড়া। আল্লাহতালা আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ এই দুনিয়া আসমান জমিনের মালিক। আমরা সবাই তার অনুগত বান্দা। আল্লাহতালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তার এবাদত করার জন্য।আমাদের সৃষ্টি করার প্রধান উদ্দেশ্য হল আল্লাহতালার ইবাদত করা। তাই আমরা আল্লাহ তাআলার ইবাদত করব এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বো। তাই আপনারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী জেনে নামাজ আদায় করবেন।
সহী হাদিছ অনুসারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী
আমরা সকলে সহি শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করব এবং নামাজের সময়সূচী জেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বো।

সহী হাদিছ অনুসারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

 ফজর 

সকালের আভা ছড়িয়ে পড়ার আগেই এই নামাজ আদায় করে নিবেন। তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োজনে সূর্যের উদীয়মান প্রথম অংশ পূর্ব দিগন্তরেখা অতিক্রম করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। সূর্যোদয়ের সময় নামাজ পড়া নিষেধ।ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত। প্রথমে দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং দুই রাকাত ফরজ।

যোহর

মধ্যাহ্নে সূর্য তার সর্বোচ্চ স্থান থেকে কিছুটা হেলে পড়ার পর পরই নামাজ আদায় করে নিবেন। সূর্যকিরণ যখন বেশ উত্তপ্ত থাকে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে একটু দেরিতে অর্থাৎ সূর্যের তেজ কিছুটা কমে এলে নামাজ আদায় করে নিতে পারেন। ক্ষেত্র বিশেষে আছরের সময় হওয়া পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে।

যোহরের নামাজ মোট দশ রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, তারপর চার রাকাত ফরজ এবং সব শেষে দুই রাকাত সুন্নত। যদি কোন কারণে ফরজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে না পারে, তাহলে ফরজের পরে আদায় করে নিবে্ন।

আছর

জহুরের নামাজের পর অর্থাৎ মধ্যাহ্ন পেরিয়ে সূর্য যখন পশ্চিম দিগন্ত রেখা থেকে বেশ কিছুটা উপরে অবস্থান করে এবং সূর্যের উজ্জ্বলতা/তেজ বিরাজমান থাকে, সেই সময় থেকে সূর্যের সোনালী/তামাটে বর্ণ মিটে গিয়ে রক্তিম বর্ণ ধারণ করার পূর্বেই নামাজ আদায় করে নেয়া ভাল। সে সময় সূর্য দিগন্ত রেখা থেকে এতটা উপরে থাকা উচিত যে, জানালা গলে ঘরের মাঝে ছড়িয়ে পড়া সূর্যকিরণ মিটে গিয়ে যেন ছায়া ঘনিয়ে না আসে।

তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োজনে সূর্যের অস্তগামী প্রথম অংশ দিগন্তরেখা অতিক্রম করার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। সূর্যাস্তের সময় নামাজ পড়া নিষেধ।আসরের নামাজ মোট আট রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নতে জা\'য়েদা (অনাবশ্যক) এবং অতঃপর চার রাকাত ফরজ।

মাগরিব

সূর্য সম্পূর্ণরূপে অস্ত যাবার পর কিছু সময়ের মধ্যেই নামাজ আদায় করে নেয়া ভাল। তবে সূর্যাস্তের পর হতে যতক্ষণ পর্যন্ত নিক্ষিপ্ত কোন তীরের পতিত হবার স্থান দৃষ্টিগোচর হয় অর্থাৎ গোঁধুলির রেশ বিরাজমান থাকা (পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা অদৃশ্য হয়ে রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে না আসা) পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে।মাগরিবের নামাজ মোট পাঁচ রাকাত। প্রথমে তিন রাকাত ফরজ এবং তারপর দুই রাকাত সুন্নত।

ইশা

রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে আসার পর হতে এই নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং রাতের এক তৃতীয়াংশ সময় থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত যে কোন সময়ে নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে।ইশার নামাজ মোট দশ রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নতে জা\'য়েদা (অনাবশ্যক), চার রাকাত ফরজ এবং সবশেষে দুই রাকাত সুন্নত। এছাড়াও তিন রাকাত বিতরের ওয়াজিব নামাজ ইশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পরেই আদায় করে নেওয়া যায়।

শেষ কথা

ফজর, জহুর, আছর ও মাগরিবের নামাজ বেশি দেরি করা যাবে না ওয়াক্ত হয়ে যাবার কিছু সময়ের মধ্যেই আদায় করে নেয়া উত্তম। কোন কারনে সময় সম্পর্কে বেখেয়াল হয়ে গেলে বা ঘুমিয়ে থাকলে বা কোন বিশেষ কারনে কোন নির্দিষ্ট নামাজের ওয়াক্ত/সময় পেরিয়ে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা আদায় করে নিবেন এক্ষেত্রে অবশ্যই নামাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে অর্থাৎ যে ওয়াক্তের নামাজ মিস হয়েছে তা আগে আদায় কোরে নিতে হবে।

যেমন সূর্যাস্তের আগে আছরের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হলে সূর্যাস্তের পর আগে আছরের নামাজ এবং তারপর মাগরিবের নামাজ আদায় করতে হবে। তবে এরজন্য মহান আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সফরে থাকলে মাগরিব একটু দেরিতে পড়ে তার পরপরই ইশার নামাজ আদায় করে নেয়ার অবকাশ রয়েছে। আবার সূর্য ঢলে পড়ার আগে সফরে বের হলে জুহুর একটু দেরিতে পড়ে একসাথে আছরের নামাজ আদায় করে নেয়া যায়। আশা করছি আপনারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url