দুই, তিন, চার রাকাত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক আপনি দুই, তিন, চার রাকাত নামাজের নিয়ম জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন কিন্তু কোথাও এর সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ দুই, তিন, চার রাকাত নামাজের নিয়ম জানানোর চেষ্টা করব। নামাজের নিয়ম না মেনে চললে নামাজ কখনো কবুল হবে না। তাই আপনাদের নামাজের নিয়ম মেনে নামাজ পড়তে হবে।
দুই, তিন, চার রাকাত নামাজের নিয়ম
যিনি এই দুনিয়া আসমান জমিনের মালিক। আমরা সবাই তার অনুগত বান্দা। আল্লাহতালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তার এবাদত করার জন্য।আমাদের সৃষ্টি করার প্রধান উদ্দেশ্য হল আল্লাহতালার ইবাদত করা। তাই আমরা আল্লাহ তাআলার ইবাদত করব এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বো।

ভূমিকা

পরম দয়ালু আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তার ইবাদত করার জন্য। আমাদেরকে তৈরি করা হয়েছে আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন।ইসলামে নামাযের গুরুত্ব অপরিসীম। নামায ইসলামের দ্বিতীয় রুকন, যা সুপ্রতিষ্ঠিত করা ব্যতীত মুসলমান হওয়া যায় না। নামাযে অবহেলা, অলসতা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা মুতাবিক নামায পরিত্যাগ করা কুফরি, ভ্রষ্টতা এবং ইসলামের গণ্ডীবহির্ভূত হয়ে যাওয়া। সহীহ হাদীসে এসেছে,

بين الرجل وبين الكفر والشرك ترك الصلاة

অর্থ: “মুমিন ও কুফর-শিরকের মধ্যে ব্যবধান হল নামায পরিত্যাগ করা”। (মুসলিম)

দুই রাকাত নামাজের নিয়ম

দুই রাকাত নামাজের নিয়ম নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • প্রথমে অজু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়বেন।
  • মনে মনে নামাজের নিয়্যত করবে এবং আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমার পরে নারীরা বুকের উপর ও পুরুষেরা নাভীর উপরে হাত বাঁধবে (বাম হাঁতের উপরে ডান হাত)
  • প্রথমে সানা পড়বে।
  • সূরা ফাতিহা পড়বে এবং তারপরে অন্য একটি সূরা মিলাবে।
  • ধীর-স্থিরভাবে রুকু ও দুই সিজদা করে উঠে দাঁড়াবে এবং পূর্বের ন্যায় হাত বাঁধবে।
  • সূরা ফাতিহা পড়বে এবং অন্য কোন সূরা মিলাবেন।
  • সম্পূর্ণভাবে রুকু-সেজদা করবে এবং উঠে না দাঁড়িয়ে বৈঠকে বসবে। বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করবে। অতঃপর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

তিন রাকাত নামাজের নিয়ম

  • প্রথমে অজু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়বে্ন
  • মনে মনে নামাজের নিয়্যত করবে এবং আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমার পরে নারীরা বুকের উপর ও পুরুষেরা নাভীর উপরে হাত বাঁধবে (বাম হাঁতের উপরে ডান হাত)
  • প্রথমে সানা পড়বেন ।
  • সূরা ফাতিহা পড়বে এবং তারপরে অন্য একটি সূরা মিলাবেন ।
  • ধীর-স্থিরভাবে রুকু ও দুই সিজদা করে উঠে দাঁড়াবে এবং পূর্বের ন্যায় হাত বাঁধবে্ন।
  • সূরা ফাতিহা পড়বে এবং অন্য কোন সূরা মিলাবেন।
  • পূর্বের ন্যায় রুকু সেজদা করে উঠে না দাঁড়িয়ে সোজা হয়ে বসবে (প্রথম বৈঠক), এবং তাশাহুদ পাঠ করবে্ন।
  • আল্লাহু-আকবার বলে উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবে এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। ফরজ নামাজ না হলে সূরা ফাতিহার পর আরেকটি সূরা মিলান।
  • বিতরের নামাজ হলে তৃতীয় রাকাতে রুকু সেজদার আগে পুনরায় একটি তাকবির দিয়ে হাত বাঁধবে এবং দোয়া কুনুত পাঠ করবে্ন।
  • সম্পূর্ণভাবে রুকু-সেজদা করবে এবং উঠে না দাঁড়িয়ে বৈঠকে বসবে। বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করবে। অতঃপর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।

চার রাকাত নামাজের নিয়ম

  • প্রথমে ওযু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়বেন।
  • মনে মনে নিয়ত করুন, কোন ওয়াক্তের নামাজ এখন পড়বেন। সুন্নত, ফরজ, ওয়াজিব না নফল নিয়তে সেইটা উল্লেখ করুন। এবং আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমার পরে নারীরা বুকের উপর ও পুরুষেরা নাভির উপরে হাত বাঁধবেন।
  •  সানা পড়বেন।
  • এবার মনে মনে আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম পড়ুন।
  • সূরা ফাতিহা পড়ুন এবং তারপরে অন্য একটি সূরা মিলান।
  •  সাবধানে সাথে রুকু ও দুই সিজদা করে ওঠে দাঁড়ান এবং পূর্বের ন্যায় হাত বাধেন।
  • সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং অন্য একটি সূরা মিলাবেন।
  • পূর্বের ন্যায় রুকু সেজদা করে উঠে না দাঁড়িয়ে সোজা হয়ে বসবেন এবং তাশাহুদ পাঠ করবেন।
  • আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবেন এবং সুরা ফাতেহা পাঠ করবেন। ফরজ নামাজ না হলে সুরা ফাতেহার পর আরেকটি সূরা মিলাবেন।
  • রুকু সেজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবেন। তৃতীয় রাকাতে নিয়ম অনুযায়ী সূরা পাঠ করবেন।
  • সম্পূর্ণভাবে রুকু সেজদা করবেন এবং উঠে না দাঁড়িয়ে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করবেন। অতঃপর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।

আমাদের শেষ কথা

আর্টিকেলটি পরে আপনারা দুই, তিন, চার রাকাত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তাই এবাদত করার জন্য। তাই আপনারা সঠিকভাবে নামাজ পড়ার নিয়ম জানা দরকার। তা না হলে নামাজ কবুল হবে না। নামাজের নিয়ম কানুন জেনে অবশ্যই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন।আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url