অনলাইন ট্রেডিং কি? ট্রেডিং কিভাবে করব - বিস্তারিত জানুন

পৃথিবীর কে না চায় অনলাইনে ইনকাম করতে তবে যদি হয় সেটি ট্রেডিং তবে আমরা আজকের আর্টিকেল টিতে অনলাইন ট্রেডিং কি? ট্রেডিং করে কিভাবে ইনকাম করা যায় এবং ট্রেডিং কিভাবে করব ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করব। তাই দেরি না করে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অনলাইন ট্রেডিং কি? ট্রেডিং করে ইনকাম উক্ত বিষয় সহ নিচে আলোচনা করা হলো। তাই ট্রেডিং করে ইনকাম করতে চাইলে বা ট্রেডিং সম্পর্কে ধারণা নিতে চাইলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

পোস্ট সূচীপত্র ঃঅনলাইন ট্রেডিং কি? ট্রেডিং কিভাবে করব

বর্তমানে আধুনিক যুগে কে না চায় অনলাইন থেকে ইনকাম করতে। আরে এই ইনকাম যদি হয় ট্রেডিং করে তাহলে বুঝতে পারছেন ট্রেডিং করে অনলাইন থেকে আয় করা যায়। অনলাইনে সাধারণত পণ্য কেনাবেচা বা যে কোন কিছুর বিনিময় করাকে ট্রেডিং বলে।একটি দেশের মুদ্রাকে যখন অন্য কোনো দেশের মুদ্রার সাথে বদল করা হয়, তখন তাকে এক্সচেঞ্জ বলে। আর আমরা যেই ট্রেডিং করব সেটা হল ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং। এই পোস্টটিতে আমরা ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিচে অনলাইন ট্রেডিং সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

অনলাইন ট্রেডিং কি

সাধারণত দুই বা ততোধিকের মাঝে কোন পন্য বা অন্য যেকোন কিছুর ক্রয় বিক্রয় বা বিনিময় করাকে ট্রেডিং বলে। ধরুন আপনার কাছে কোন জিনিস বা পণ্য অতিরিক্ত আছে।অন্য কারো সাথে সেই জিনিস বা পন্যকে ক্রয় বিক্রয় বা বিনিময় করাকেই ট্রেডিং বুঝায়। নতুন ট্রেডার হিসেবে মনে রাখা উচিত, ট্রেডিং করা খুব কঠিন এবং এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক পেশা। অতএব ট্রেডিং করলেই যে প্রফিট হবে এমন মনোভাব না রাখাটাই শ্রেষ্ঠ। আমার এখানে ট্রেডিং বলতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং বলে থাকি।
এখন যদি প্রশ্ন করেন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং কি ? ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং মূলত ভার্চুয়াল কয়েন যা দেখা যায় না অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের ভার্চুয়াল কয়েন নিয়ে ট্রেডিং করাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং বলে।

ট্রেডিং করে ইনকাম

ট্রেডিং বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইন ইনকামের একটা পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতদিন যাচ্ছে মানুষ বেশি ট্রেডিং এর দিকে ঝুকছে। আমরা যেহেতু ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং করব তাই আমাদের কিছু বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।' ধরুন আপনি যদি ২০০ ডলারের কোন কয়েন বা অন্য কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনেন তাহলে অবশ্যই পৃথিবীর অন্য কেউ সেই ২০০ ডলারের কোন কয়েন বা অন্য কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি বিক্রি করতেছে।

ঠিক তেমনিভাবেই, আপনি যদি এই মূহুর্তে ১০ ডলার প্রফিট করেন, তাহলে পৃথিবীর অন্য কেউ সেই ১০ ডলার লস করবে । আবার একইভাবে আপনি যদি ১০ ডলার লস করেন তাহলেও পৃথিবীর কেউ না কেউ সেই ১০ ডলার লাভ করবে। তাই অবশ্যই ট্রেডিং করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এভাবে ট্রেডিং করে অনলাইন থেকে আয় করা যায়।

ট্রেডিং কিভাবে করব

ট্রেডিং আপনিবিভিন্ন ভাবে করতে পারি।ট্রেডিং মূলত অনেকভাবে করতে পারি। যেমনঃআমরা মোবাইল ব্যবহার করে অনলাইনে ট্রেডিং করতে পারি। এছাড়া ল্যাপটপ ,পিসি ব্যবহার করে ট্রেডিং করতে পারি।ট্রেডিং এর জন্য বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জার রয়েছে।
  • Binance,kucoin,Bybit,Mexe সহ আরো অনেক এক্সচেঞ্জার রয়েছে। এই এক্সেঞ্জার গুলো ব্যবহার করে আপনি ট্রেডিং করতে পারবেন।
পার্সোনাল ওয়ালেট বা নিজস্ব একাউন্ট দরকার হবে ট্রেডিং করার জন্য। আপনি এই ওয়ালেটটি প্রফিট বা লাভকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবহার করবেন। আপনার অবশ্যই এক্সচেঞ্জ ওয়ালেট থাকতে হবে। এই ওয়ালেটের মাধ্যমে আপনি ট্রেডিং করতে পারেন। ওয়ালেট হিসাবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন Binance exchanger। এটি সবচেয়ে সুরক্ষা ও সিকিউরিটির দিক দিয়ে অন্যান্য এক্সচেঞ্জার থেকে উন্নত। নতুন ট্রেডাররা এটি ইউজ করতে পারেন।

ট্রেডিং করার জন্য অবশ্যই আপনাকে টেকনিকেল এনালাইসিস শিখতে হবে।ট্রেডিংকে এ পেশা বা কেরিয়ার করার পূর্বে অবশ্যই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করা শিখতে হবে। এনালাইসিস এর সাহায্যে কয়েনের দাম কতটুকু উপরে বা নিচে যেতে পারে এটা নির্ণয় করা যাবে । যেমন, কখন কোন কয়েনে এন্ট্রি নিতে হবে এবং এক্সিট নিতে হবে এটা জানা যাবে । ট্রেডটিতে কতটুকু প্রফিটের চান্স আছে এবং কোথায় আপনি স্টপ-লস বসাবেন সেটা নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে এই টেকনিক্যাল এনালাইসিস। এক কথায় এটিই আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

আপনি নিজের স্ট্র্যাটেজি প্রয়োজন অনুযায়ী স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আনতে পারেন। তবে প্রত্যেকটি কয়েন বেস পেয়ারে একই স্ট্র্যাটেজি কাজ করবে না। তাই কয়েন অনুযায়ী আপনাকে স্ট্র্যাটেজিকে সাজাতে হবে। এতে আপনার স্ট্র্যাটেজি আরও শক্তিশালী এবং অন্যের থেকে আলাদা হবে।

আপনাকে অবশ্যই ট্রেডিং করার সময় অবশ্যই মাসিক একটি টার্গেট সেট করতে হবে । এই টার্গেট অনুযায়ী ট্রেডিং করবেন। কোথাও কনফিউশন হলে চার্টের, পূর্বের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে কোথাও মিল খুজে পাওয়া যায় কিনা । বেশিরভাগ সময়ই মার্কেট পূর্বের ন্যায় আচরণ করে । তাই সবসময়ই মার্কেটে পরিচিত প্যাটার্ন খুজে হবে ।

আশাকরি এই আর্টিকেল পড়ে আপনি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন ট্রেডিং শুরু করার পূর্বে আপনাকে কি কি প্রস্তুতি নিবেন । এভাবে আপনাকে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে যে কিভাবে ট্রেডিং করবেন। মনে রাখবেন যত শিখবেন তত প্রফিট করার সুযোগ বেড়ে যাবে ।

সফল টেডার হিসেবে আমরা অনেকেই মার্কেটে ট্রেড করতে আগ্রহী থাকি, কিন্তু ভালো করে মার্কেট সম্পর্কে না জেনেই ট্রেড শুরু করে দেই। কিছুদিন প্রাকটিস ট্রেড করেই আমারা রিয়েল ট্রেডার হিসেবে করা শুরু করে দেই। ট্রেডিং মার্কেট থেকে প্রফিট করা যতটা সহজ তার থেকে বড় কষ্ট হচ্ছে নিজের বিনিয়োগকৃত এমাউন্টকে টিকিয়ে রাখা। আমাদের এমন অনেক পরিচিত মুখ আছে যারা প্রাথমিক অবস্থায় খুব ভালো প্রফিট করেছে কিন্তু সবশেষে তাদের বিনিয়োগকৃত এমাউন্টকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি। যেটা খুবই হতাশা এবং দুঃখজনক।

নতুনদের জন্য কোন ধরনের ট্রেডিং করা ভালো

আমরা যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং কথা বলে থাকি। তাহলে ট্রেডিং দুইভাবে করতে পারেন।
  • শর্ট টাইম ট্রেডিং
  • লং ট্রাইম টেডিং
নতুন ট্রেডার হিসেবে আপনাকে অবশ্যই শর্ট টার্ম ট্রেডিং করতে হবে। এখানে আপনাকে স্বল্প সময়ের মধ্যে কিছু প্রফিট নিয়ে বের হয়ে আসতে হবে। এজন্য নতুন ট্রেডার হিসাবে আপনারা শর্ট টার্ম ট্রেড করবেন। শর্ট টার্ম ট্রেডিং হল স্বল্প সময়ে ট্রেড করে এক্সিট নেওয়া। আপনি যেহেতু নতুন ট্রেডার তাহলে আপনি লং টার্ম ট্রেডিং যাবেন না। লং টাইম ট্রেডিং জন্য আপনাকে টেকনিকাল এনালাইসিস শিখতে হবে। না হলে এখান থেকে আপনি লাভ থেকে বেশি লসই করবেন। ট্রেডিং থেকে লাভ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হবে । টেকনিক্যাল এনালাইসিস জানতে হবে। আর মনে রাখবেন আপনি যত প্র্যাকটিস করবেন তত আপনার এ বিষয়ে জ্ঞান বাড়বে এবং আপনি অভিজ্ঞ হবেন।

মোবাইল ট্রেডিং কিভাবে করব

মোবাইলে ট্রেডিং করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস রয়েছে যা ব্যবহার করে আপনি ট্রেডিং করতে পারবেন। এপ্স গুলো ইন্সটল করে ট্রেড করতে পারবেন।
  • BINANCE
  • KUCOIN
  • MEXE GLOBAL
  • BYBIT
  • BITGET
ইত্যাদি অ্যাপস গুলো ইন্সটল করতে পারেন। উপরোক্ত অ্যাপস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেস্ট হলো বাইনান্স এক্সচেঞ্জ। টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর জন্য যে অ্যাপ ইউজ করবেনঃTrading view। আপনি যখন একদম প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রেড শিখেবন, তখন আপনার সামনে কিছু অপরিচিত বিষয় আসবে- যেমনঃ ট্রেডলাইন, সাপোর্ট, রেসিস্টেন্স, পিভট পয়েন্ট আরও অনেক কিছু।গুগল থেকে অনেক কিছু খোঁজার চেষ্টা করবেন তারপরেও হয়তোবা বুঝতে পারবেন না।

ট্রেডিং কি হালাল

ট্রেডি হালাল কিনা আপনারা প্রায় এটি গুগলে সার্চ করে থাকেন।ট্রেডিং হালাল হবে তখন , যখন পর্যন্ত আপনি ট্রেডিং করে উপার্জন করার সময় সুদ গ্রহণ করবেন না। ট্রেডিং করে হালাল এবং হারাম দুই পথেই ইনকাম করা যায়। অনেকেই দ্রুত টাকা ইনকাম করার জন্য ট্রেডিং করার সময় ইন্টারেস্ট বা সুদ গ্রহণ করে থাকে। এর ফলে, তাদের ইনকাম এর সম্পূর্ণ টাকাই হারাম হিসেবে গন্য হবে।এই মার্কেটে সময় দিলে আপনার লাভ হবে না হলে লস হবে যা কিনা নরমাল বিজনেস এর মতো।আপনি যদি হালাল ভাবে ট্রেডিং করে আয় ইনকাম করতে চান, তবে আপনাকে সুদ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এক কথায় বলা যায় ট্রেডিং সম্পন্ন হারামও নয় আবার হালাল ও নয়। আপনি যদি ট্রেডিং এর নিয়ম কানুন অনুযায়ী ইনকাম করেন এবং সুদ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন কোন প্রকার ইন্টারেস্ট ছাড়া তাহলে ট্রেডিং হালাল হবে।আরেক প্রকার ট্রেডিং রয়েছে যা ফিউচার ট্রেডিং নামে পরিচিত। এটি সম্পূর্ণ হারাম। কারণ এখানে আপনার বিক্রিতো কয়েন বা কারেন্সি দাম হবে ৩০ থেকে ৪০ গুন। যা কিনা অতিরিক্ত লাভ দেয় এবং লস হলে অতিরিক্ত লস হয়। এটা অনেকটা সুদ এর মত। তাই আমরা সকলে ফিউচার ট্রেড থেকে বিরত থাকবো।

আমাদের মন্তব্য

“শিখার কোনও শেষ নেই”কথায় আছে। আর মার্কেটে এটা আপনার কোনও দিনও শেষ হবে না। আপনি যত ট্রেড করবেন ততো বেশী শিখবেন। তাই আপনাকে ধৈর্য সহিত ট্রেডিং বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আর সাথে প্র্যাকটিসও করতে হবে। আপনি যদি এগুলো কিছু না করে ট্রেড করতে আসেন তাহলে ট্রেড আপনার জন্য নয়। আপনি এখানে প্রচুর লস করতে পারেন। তাই ট্রেড করার আগে অবশ্যই টেকনিক্যাল এনালাইসিস শিখবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিস নিয়ে আমরা পরবর্তী নেক্সট আর্টিকেল আলোচনা করব। আজ এই পর্যন্ত উপরোক্ত আলোচনাটি ট্রেডিং নিয়ে করা হয়েছে। যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url